পরিত্যক্ত কুটির - প্রবেশ করতেই তাদের চোখে পড়ল পুরনো জিনিসপত্র | স্টোরি বাংলা | Story Banglaa

পরিত্যক্ত কুটির - প্রবেশ করতেই তাদের চোখে পড়ল পুরনো জিনিসপত্র | স্টোরি বাংলা | Story Banglaa - bangla golpo - short bangla story - love story - romantic golpo - eroti*c golpo- choti golpo - se'x story - bhoutic golpo - suspense/thriller bangla golpo
পরিত্যক্ত কুটির

 

অধ্যায় ১: রহস্যের আহ্বান


শ্রীমঙ্গল শহরের প্রান্তে একটি পুরনো পরিত্যক্ত কুটির ছিল, যেখানে কেউ যেতে সাহস করত না। শহরের লোকেরা বলত, সেখানে রাতের বেলা অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় এবং কিছু অশরীরী ঘটনা ঘটে। কিছু তরুণ বন্ধু, রাজ, সোহেল, তাসমিন, এবং মিতু, সিদ্ধান্ত নিল তারা সেই কুটিরে যাবে। তাদের মনে ছিল সারা দিন আড্ডা দেওয়ার পরিকল্পনা, কিন্তু রাতের অন্ধকারে কুটিরের রহস্যের খোঁজে যাওয়া তাদের উদ্দেশ্য ছিল।



অধ্যায় ২: কুটিরের আবিষ্কার


একদিন বিকেলে, তারা একটি বাইকের পিছনে করে কুটিরের দিকে রওনা দিল। কুটিরটি দেখতে ভয়াবহ ছিল; চারপাশে ঝোপঝাড় এবং পুরনো গাছপালায় আচ্ছাদিত। কুটিরের দরজা ছিল খোলা, যেন তাদের স্বাগত জানাতে চাচ্ছিল। তারা ভিতরে প্রবেশ করতেই প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অনুভব করল, যেন তাদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ছিল।


“এই কুটিরে ঢোকা ঠিক হচ্ছে?” তাসমিন চিন্তিত স্বরে বলল।


“কেন নয়? এখানে কিছু ভয়ঙ্কর কিছু নেই,” রাজ উত্সাহিত হয়ে উত্তর দিল।


সোহেল বলল, “তবে কেউ তো এখানে আসেনি অনেক বছর। আমাদের সাবধান হতে হবে।”


অধ্যায় ৩: প্রথম ঘটনা


কুটিরের ভিতরে প্রবেশ করতেই তাদের চোখে পড়ল পুরনো জিনিসপত্র—একটি ফাটল ধরা সোফা, কাঁচ ভাঙা টেবিল এবং দেয়ালে লেপ্টানো কাঁকড়া। ঠিক তখনই, হঠাৎ করে তারা একটি শব্দ শুনতে পেল।


“শোন, কী হচ্ছে?” মিতু ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করল।


“হয়তো পাখির আওয়াজ,” রাজ বলল, কিন্তু তার কণ্ঠে অসুস্থ আত্মবিশ্বাস ছিল।


তারা কুটিরের অন্ধকার কক্ষে প্রবেশ করল। সেখানে একটি পুরনো কাঠের চেয়ার ছিল, যা অদ্ভুতভাবে পেঁচানো ছিল। মিতু চেয়ারের দিকে ইঙ্গিত করে বলল, “এটা কেন এখানে?”



অধ্যায় ৪: অশরীরী উপস্থিতি


ঠিক তখনই, তারা হঠাৎ কিছু অদ্ভুত দেখতে পেল। এক কোণে, অন্ধকারে দু’টি অশরীরী আকার তাদের দিকে তাকিয়ে ছিল। তারা হঠাৎ করে কেঁপে উঠল। “এটা কী?” সোহেল চিৎকার করে উঠল।


শরীর শিউরে উঠল তাদের। কুটিরের দরজা নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে গেল। অশরীরী দুইটি ব্যক্তি একে অপরকে দেখিয়ে কিছু বলছিল। তারা দেখতে ছিল রক্তমাখা পোশাক পরা, এবং তাদের মুখগুলো অন্ধকারের মধ্যে অদৃশ্য।


“আমরা কি কিছু দেখছি? নাকি এটা কল্পনা?” রাজ বলল, আতঙ্কিত হয়ে।


অধ্যায় ৫: গোপন সত্য উন্মোচন


হঠাৎ করে, তারা একটি পুরানো ভিডিও ক্যামেরা খুঁজে পেল। ক্যামেরা খুলতেই, সেখানে রেকর্ড করা একটি ভিডিও দেখা গেল, যেখানে সেই অশরীরী ব্যক্তিরা একটি হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য reenactment করছিল। ভিডিওতে, তারা দেখল একজন মহিলা চিৎকার করে হত্যা করা হচ্ছে, এবং একজন পুরুষ তার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে।


“এটা কী? আমাদের কি কিছু করতে হবে?” তাসমিন ভয়ে বলল।


রাজ ক্যামেরাটি কেঁপে ধরে বলল, “হত্যার রহস্য কি এখানে লুকিয়ে আছে?”


অধ্যায় ৬: সত্যের সন্ধানে


তারা ভিডিও দেখতে থাকল, এবং অবশেষে একটি নাম পেল—মৃণালিনী। মৃণালিনীর সম্পর্কে কিছু জানার জন্য তারা কুটিরের পুরনো বইগুলোর দিকে তাকাল। সেখান থেকে জানতে পারল, বহু বছর আগে এই কুটিরে এক হত্যাকাণ্ড ঘটে। মৃণালিনী নামে একজন মহিলা হত্যা হন এবং তার হত্যাকারী ছিলেন তার স্বামী।


“এখন আমাদের কি করতে হবে?” মিতু জিজ্ঞেস করল।


“আমাদের সত্য উন্মোচন করতে হবে,” রাজ বলল। “এই কুটিরের ইতিহাস জানতে হবে। হয়তো মৃণালিনীর আত্মা আমাদের সাহায্য করবে।”


অধ্যায় ৭: মৃণালিনীর আত্মার আহ্বান


রাতের অন্ধকারে, তারা কুটিরের পিছনের বাগানে গেল। সেখানে মৃণালিনীর একটি পাথরের স্মৃতিস্তম্ভ ছিল। সেখানে একটি পুরানো ফোটো ছিল, যা তাদেরকে প্রথম থেকেই চিনতে সাহায্য করল।


“মৃণালিনী!” তাসমিন কেঁদে উঠল। “আমরা তোমাকে সাহায্য করতে চাই!”


হঠাৎ করে, বাতাসে এক অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটতে লাগল। চারপাশে কান্নার শব্দ শোনা যেতে লাগল। “তুমি কি আমাকে উদ্ধার করতে পারবে?” মৃণালিনীর কণ্ঠ শোনা গেল।


অধ্যায় ৮: রহস্যের সমাধান


তারা প্রতিজ্ঞা করল, তারা মৃণালিনীর হত্যাকারীকে খুঁজে বের করবে। রাজ, সোহেল, তাসমিন, এবং মিতু একসাথে কুটিরের পুরানো ইতিহাসের দিকে নজর দিল।


কিছু সময় পরে, তারা জানতে পারল, মৃণালিনীর হত্যাকারী ছিলেন তার স্বামী, যিনি মারা গিয়েছিলেন কয়েক বছর পরে। কিন্তু তার আত্মা এখনও এখানে রয়েছে, কারণ সে অপরাধের স্বীকার করেনি।


“আমাদের সত্যি বলতে হবে,” রাজ বলল। “আমরা তার আত্মাকে মুক্ত করতে হবে।”

অধ্যায় ৯: মুক্তির পথ


কিছু সময় পর, তারা স্থানীয় থানায় গেল এবং কুটিরের রহস্য জানাল। পুলিশ তদন্ত শুরু করল এবং অবশেষে হত্যার ঘটনা প্রকাশ পেল।


পুলিশ তদন্ত শুরু করার পর, তারা মৃণালিনীর হত্যাকারীকে পুনরায় খুঁজে পায়। কিন্তু সে তো মারা গেছে! তাহলে কি তার আত্মা শান্তি পাবে?


তারা ঠিক করল, তাদের মৃণালিনীর স্মৃতির জন্য একটি মেমোরিয়াল তৈরি করবে। সেখানেই মৃণালিনীর আত্মা মুক্তি পাবে।

অধ্যায় ১০: নতুন সূচনা


অবশেষে, মেমোরিয়াল তৈরি হলো এবং কুটিরটি নতুনভাবে সাজানো হলো। কুটিরটি এখন শহরের একটি প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল, যেখানে হত্যার ইতিহাস ছিল, কিন্তু এখন এটি শান্তির এবং মৃণালিনীর স্মৃতির স্থান।


সুজাতা, রাজ, সোহেল, তাসমিন, এবং মিতু কুটিরের কাছে এসে বলল, “এখন আমরা জানি, সত্যের সন্ধানে এগিয়ে যেতে হবে।”


এভাবে, মিথ্যার কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া মৃণালিনী এবং তার হত্যাকাণ্ডের রহস্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল, যেখানে বন্ধুত্ব, সাহস এবং সত্যের সন্ধান ছিল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ